কোন সিরাম ভালো? সিরাম ব্যবহারের নিয়ম জেনে নিন

সিরাম আসলে কি? সিরাম আপনার রুপচর্চায় দারুন একটি সঙ্গী! সিরাম সাধারনত মুখে এবং চুলে ব্যবহার করা হয়। তবে এদের ধরন,উপাদান,ব্যবহার ভিন্ন ভিন্ন। 
কোন সিরাম ভালো? সিরাম ব্যবহারের নিয়ম জেনে নিন
বর্তমানে স্কিনকেয়ার করার জন্য সিরামের জনপ্রিয়তা মাত্রা ছাড়িয়েছে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে,

ত্বকে সিরাম কেন ব্যবহার করে?

আসলে ত্বকের একেক সমস্যার জন্য একেকটি সিরাম তৈরী করা হয়েছে। ত্বকে ভাজ পড়ার জন্য বা এন্টি-এজিং এর জন্য এক রকম সিরাম, ত্বক ডাল হয়ে গেলে, একনি হলে,পিগমেন্ট হলে ভিন্ন ভিন্ন সিরাম। কোন সমস্যায় কি সিরাম লাগাবেন তা জানতে আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলটি পড়ুন।কারণ সিরাম আপনার ত্বকের জন্য বেস্ট মেডিসিন।

সুতরাং, আপনি অবশেষে বাড়িতে ফেইস সিরাম নিয়ে এসেছেন।জাদুর ছোট্ট শিশি যা আপনার ত্বককে রূপান্তরিত করতে পারে উজ্জ্বল, তারুণ্যময়, দাগমুক্ত, স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর ত্বকে।এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনি কি জানেন কিভাবে ফেস সিরাম ব্যবহার করতে হয়? যদিও এটি জিজ্ঞাসা করা খোঁড়া প্রশ্ন মনে হতে পারে।তবে সত্যি হল যে সবাই ফেইস সিরাম ব্যবহার করার সঠিক ক্রম জানেনা বলেই এই আশ্চর্য পন্যটির সর্বাধিক বেনিফিট পায় না, তাই সিরাম ব্যবহারের সঠিক ক্রম অবলম্বন করাটা খুবই জরুরী।

সিরাম কখন ব্যবহার করবো?

অনেকে মনে করে থাকেন যে সিরাম মশ্চারাইজারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কথাটা একেবারেই ভুল। 

কীভাবে ফেইস সিরাম ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে ধাপে ধাপে নির্দেশিকা দেওয়া হলোঃ

ফেইস সিরাম ব্যবহার করে এবং এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল এবং মসৃন ত্বক পেতে পারেনঃ

ধাপ-১: ড্রপার থেকে আপনার হাতের তালুতে মটর আকারের পরিমাণ (প্রায় ৩-৪ ফোঁটা) ফেইস সিরাম নিন। 

ধাপ-২: সিরাম খুব বেশি না ঘষে আপনার হাতের তালুর মধ্যে ছড়িয়ে দিন।

ধাপ-৩: ছোট এবং মৃদু ট্যাপিং মোশন ব্যবহার করে আপনার মুখ এবং ঘাড়ে সিরামটি লাগান। আপনার পরবর্তী স্কিনকেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহারের আগে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন।

ফেইস সিরাম ম্যাসাজ করা উচিত নাকি ত্বকে আলতো করে ট্যাপ করা উচিত?

ফেইস সিরাম ব্যবহার করা আদতে কঠিন নয়। অন্যান্য স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট যেমন ঘন ফেস ক্রিম এবং ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করার জন্য আপনার ত্বকে ম্যাসেজ করা বা ঘষার প্রয়োজন হয়। তবে ফেইস সিরাম আপনার ত্বকে সম্পূর্ণরূপে প্রবেশ করার জন্য ছোট ট্যাপিং মোশনে আপনার মুখে প্রয়োগ করতে হবে। খুব বেশী ঘষাঘষি বা ম্যাসেজ করা যাবেনা। কারণ সিরাম আপনার ত্বকে সহজেই শোষণ হয়ে যায়।

মুখের সিরাম নাকি ময়েশ্চারাইজার?

ফেইস সিরাম কিভাবে ব্যবহার করবেন তার উত্তর তো পেয়েছেন।আসুন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের কথা বলা যাক - আপনার ত্বকের যত্নে কখন এটি ব্যবহার করা উচিত? ময়েশ্চারাইজারের আগে নাকি পরে? মুখের সিরাম ব্যবহার করার এই সুবর্ণ নিয়মটি মনে রাখবেন, পাতলা বা লাইট ওয়েট প্রসাধনিগুলো প্রথমে ত্বকে যায়। যেমন, টোনার, সিরাম এগুলো সবসময় আগে ব্যবহার করেত হবে। তারপরে ময়েশ্চারাইজার এবং নাইট ক্রিমের মতো ঘন বা থিক কনসিস্টেন্সির প্রোডাক্টে যান। এর কারণ হলো মোটা বা ঘন প্রডাক্ট গুলো ত্বকে আগে এ্যাপ্লাই করে ফেললে পাতলা বা তুলনামূলক তরল প্রোডাক্টগুলো সম্পূর্ণরূপে ফেইসে অ্যাবজর্ব বা শোষন হতে পারে না। 

অনেকেই জানতে চান "আমি কি রাতে সিরাম লাগিয়ে ঘুমিয়ে যেতে পারি?"

সারারাত সিরাম রেখে দেওয়াই আদর্শ পদ্ধতি! উপরে উল্লেখিত হিসাবে, সিরামগুলি শোষণের জন্য সময় প্রয়োজন এবং আপনি যখন ঘুমান তখন আপনার ত্বকের শোষণক্ষমতা বেড়ে যায়। তাই আপনি যদি ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি সিরাম লাগান তাহলে সেই সিরাম ত্বকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করার সময় পাবে এবং তা থেকে আপনি দুর্দান্ত ফলাফল পাবেন।

সিরাম লাগানোর পরে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারবেন কিনা?

অবশ্যই, সূর্যের আলোতে বের হওয়ার আগে আপনি সিরাম প্রয়োগ করার পরে সরাসরি সানস্ক্রিন লাগাতে পারেন।আসলে, এটি আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে একটি প্রস্তাবিত অর্ডার বলা চলে। আপনি চাইলে সিরাম লাগানোর পরে মশ্চারাইজার স্কিপ করেও সানস্ক্রিন লাগাতে পারেন।এতে আপনার স্কিন ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

সিরাম ব্যবহারে ক্ষেত্রে আরো একটি কমন প্রশ্ন হলো ‘আমি কি প্রতিদিন সিরাম ব্যবহার করতে পারবে?’

এর উত্তরটা আসলে আপেক্ষিক। কিছু কিছু সিরাম ডেইলি ইউজ করা যায় যেমনঃ নিয়াসিনামাইড সিরাম, ভিটামিন-সি সিরাম। তবে রেটিনল সিরাম সপ্তাহের মধ্যে ২-৩দিন ব্যবহার করা ভালো।

তবে যেকোন সিরাম ব্যবহারের আগে অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডটি যাচাই করে নিন। ভালো শপ থেকে ভালো মানের প্রোডাক্টটি কিনুন। আর অবশ্যই পরিষ্কার ত্বক ছাড়া কখনোই সিরাম ব্যবহার করবেন না।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url