কনডম ব্যবহারের পদ্ধতি এবং উপকারিতা ও অপকারিতা
সিরাম ব্যবহারের নিয়ম জেনে নিন
কনডম হলো জন্ম নিয়ন্ত্রন ও যৌন রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে সহজলভ্য ও কার্যকর পদ্ধতি।
আজ আমরা কনডমের ব্যবহার পদ্ধতি ও এর সুবিধা অসুবিধা নিয়ে জানবো। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের কনডম পাওয়া যায় যার মধ্যে উপাদান ও আকার ব্যবহার বিধির পার্থক্য আছে।
কনডম ব্যবহারের পদ্ধতি
আমাদের দেশে কনডম মূলত পুরুষদের জন্যই বেশী পাওয়া যায়। তবে মহিলাদের জন্যও কনডম রয়েছে। তবে আমরা পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো। এটি মূলত শারীরিক সম্পর্ক করার পূর্বে পরিধান করে নিতে হয়।
পুরুষদের কনডম ব্যবহারের পদ্ধতি
- প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে যে এর প্যাকেট ছেড়া না বা মেয়াদউত্তীর্ণ না।
- সাবধানে প্যাকেটটি ছিড়তে হবে এবং রেপিং করা কনডমটি বের করতে হবে।
- পেনিস/লিঙ্গ সম্পূর্ন খাড়া থাকা অবস্থায় লিঙ্গের মাথায় কনডমটি ঢুকিয়ে বাকী রোল করা অংশটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিচের দিকে নামাত হবে।
- কনডমের মাথায় একটু ছোট জায়গা থাকে (Tip)। এটি ছাড়াও আরো আধা ইঞ্চি জায়গা মাথার দিকে (Glans penis) বাড়তি রাখতে হবে। এতে বীর্য জমে থাকার জন্য যায়গা থাকবে এবং উপচে পড়া বা ফেটে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
- কনডমের মাথার অংশে থাকা বাতাস চেপে বের করে দিতে হবে।
- কনডমে সাধারণত বেশ ভালো পরিমানের লুব্রিকেন্ট থাকে। এছাড়াও সহবাসের সময় মহিলাদের যোনীপথ দিয়ে পিচ্ছিল রস বের হয়।
- তথাপি অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রে এ সময় কম পিচ্ছিলতার জন্য ব্যাথা অনুভব হয় (Dyspareunia)। সেক্ষেত্রে আলাদা জেল যেমনঃ K-Y jelly ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে।
- তবে ভ্যাসলিন, বডি লোশন, বেবি অয়েল, অলিভ অয়েল ও নারকেল তেল এগুলো ব্যবহার না করাই ভালো। এতে কনডম আরো নরম হয়ে যায়, ফলে ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ইন্টারকোর্স বা সহবাসের শেষে পেনিস যোনীপথ দিয়ে বের করার আগেই কনডমের পেছনের রাবার (Rim) আঙ্গুল দিয়ে ধরে রাখতে হবে। যাতে বীর্যরস উপচে পড়ে বাইরে বের না হয় বা যোনিতে প্রবেশ না করে।
- তারপর কনডমটি ভালোভাবে কাগজে বা পলিথিনে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে।
মহিলাদের কনডম ব্যবহারের পদ্ধতি
- সাবধানে প্যাকেটটি ছিঁড়ে কনডমটি বের করতে হবে।
- নিজের সুবিধাজনক পজিশন যেমন এক পায়ে দাঁড়িয়ে বা দুই পা ফাঁকা করে বসে যোনীপথ উন্মুক্ত করতে হবে।
- বদ্ধ প্রান্তের ভিতরের রিং এর পাশে মৃদু চাপ দিতে হবে।
- যোনীপথে চাপ দিয়ে কমডমটি ঢুকিয়ে দিতে হবে।
- ওয়াটার বেজড লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করলে কনডমটির স্থায়ীত্বকাল বাড়ে এবং কনডমটি ছিড়ে যাওয়া, ফেটে যাওয়া কিংবা সরে যাওয়ার ভয় থাকেনা।
- তুলার দলায় চাপ দিলে যেভাবে ভিতরে ঢুকে সেভাবে কনডমকে যথাসম্ভব চেপে ভেতরে ঢুকাতে হবে, যতক্ষণ না এটি ভেতরে গিয়ে আটকে না যায়।
- কনডমের বাইরের উন্মুক্ত প্রান্তের রিংটি বাইরে হালকা ঝুলে থাকবে।
- পার্টনারকে আঙ্গুল দিয়ে কনডমের উন্মুক্ত পথে গাইড করতে হবে যাতে পেনিস বাইরে চলে না যায় বা কনডম সরে না যায়।
- সহবাস শেষে বাইরের ঝুলে থাকা রিংটি পেঁচিয়ে কনডমকে ভেতর থেকে বাইরের দিকে নিয়ে আসতে হবে। এটি কাগজ বা পলিথিনে মুড়িয়ে ফেলে দিতে হবে এবং কখনই পুনর্ব্যবহার করা ঠিক নয়।
কনডম ব্যবহারের সুবিধা
- এটি সকল যৌনরোগের প্রতিরোধক।
- জন্মনিয়ন্ত্রণের উত্তম এবং কার্যকরী পন্থা।
- কনডম সহজলভ্য এবং দামেও কম।
- কনডম পড়ে সহবাস করলে বাচ্চা হয় না।
- সঠিক মাপ এবং ফ্লেভারের কনডম আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকেও তৃপ্তি দিতে পারে।
- পুরো সময় জুড়ে সহবাস করা যায়। অর্থাৎ বীর্যপাতের আগেই পেনিস বের করে নিয়ে আসার প্রয়োজন পড়ে না।
- পূর্ণ খাড়া লিঙ্গে কনডম লাগিয়ে রাখতে আলাদা কিছুর সাহায্য প্রয়োজন হয় না।
- পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। তবে যাদের ল্যাটেক্সে এ্যালার্জি আছে তারা পলিথিন বা প্লাস্টিক ম্যাটেরিয়ালের কনডম ব্যবহার করতে পারেন।
কনডম ব্যবহারের অসুবিধা
- ফিমেল কনডম পড়তে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়।
- অনেক ক্ষেত্রে লিঙ্গ উত্থানের পর অনেক পুরুষ কনডম পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। অনেকসময় উত্তেজনাবশত ইচ্ছে করেই কনডম পরা থেকে অনেকে বিরত থাকেন, যা যৌন রোগ বহন এবং অপরিকল্পিত গর্ভ ধারণের কারণ হতে পারে।
- কনডম ১০০% গর্ভনিরোধক নয়। এছাড়া ম্যানুফ্যাকচারিং ডিফেক্ট থাকলে সহবাসের সময় ছিড়ে যেতে পারে।
- ফিমেল কনডম বেশী সময় পরে থাকলে প্রস্রাবে ইনফেকশন হতে পারে।